দুই লাখ টাকা মাসিক চাঁদা এবং ব্যবসার ভাগ চেয়েছিলো খুনিরা

সংগৃহীত ছবি

 

ডেস্ক রিপোর্ট :ঢাকার এক ব্যস্ত বাজারে কয়েকদিন আগেও যাকে আসবাব কিনে দিয়েছিলেন সোহাগ, সেই নেতৃত্বেই এবার তাকে নির্মমভাবে খুন হতে হলো। বন্ধুত্বের মুখোশ পরেআসা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল পুরোনো বিরোধ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। খুনের ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে একাত্তর টিভির হাতে এসেছে, তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার পেছনে মূলত ব্যবসায়িক দ্বন্দ।

 

ঘটনাটি ঘটে গত ৭ জুলাই। চাঁদার দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে সোহাগের দোকানে ঢোকে সারোয়ার হোসেন টিটুর নেতৃত্বাধীন একটি দল। দোকানের কর্মচারীরা আতঙ্কে সিঁড়ির দিকে দৌড়ে পালালেও সোহাগ দোকানেই ছিলেন। প্রায় ১০ মিনিট ধরে সোহাগের সঙ্গে টাকা ও ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ান টিটু। প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা ও পার্টনারশিপ দাবি করেন তিনি। উত্তপ্ত বাক্যে সোহাগ দোকান ছেড়ে বেরিয়ে যান।

 

এরপর টিটুকে গোডাউনে তালা লাগাতে দেখা যায়। জানা গেছে, ঘটনার আগে থেকেই টিটু তাদের কাছে নিয়মিত টাকা দাবি করতেন। তবে পুলিশ বলছে, এটি ছিল না নিয়মিত চাঁদাবাজি; বরং একটি পারস্পরিক ব্যবসায়িক দ্বন্দ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

 

ঘটনার দুইদিন পর, ৯ জুলাই, সোহাগ নিজেই দোকানের তালা ভেঙে ব্যবসা শুরু করেন। এরপরই ঘটে সেই ভয়াবহ ঘটনা। কার অনুমতিতে তালা ভাঙা হয়েছে, তা নিয়েই শুরু হয় সংঘর্ষ, যা রূপ নেয় খুনে। খুনের আগে টিটু এবং তার সঙ্গীরা সোহাগের বাড়িতে যাওয়া-আসা করত, খেত-দিত, এমনকি একসাথে থাকতও।

 

তবে পুলিশ এখনও বলছে, হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল না চাঁদা আদায়। তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, চাঁদাবাজির কোনো পূর্বসূচনা বা অভিযোগ তাদের কাছে নেই। বরং ঘটনাটি এক ধরনের পারস্পরিক দ্বন্দ থেকেই তৈরি।

 

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে ১৯ জন আসামির নাম থাকলেও এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাত্র ৫ জনকে। মামলার প্রধান আসামিকে ধরা গেলেও এখনো ধরা যায়নি ঘটনার মূল হোতা সারোয়ার হোসেন টিটুকে।

 

সোহাগের পরিবার ও স্থানীয়রা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সোচ্চার হলেও তদন্ত এখনও চলমান। বন্ধুত্বের মুখোশের আড়ালে যে ভয়াবহতা লুকিয়ে থাকতে পারে, সোহাগের ঘটনা তারই একটি নির্মম প্রমাণ।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে বাস চালকের মৃত্যু,আহত ১৫

» সাহসী প্রশ্ন তুলুন, বিভ্রান্তি নয় সত্য সামনে আনুন: সাংবাদিকদের শফিকুল

» রিকশাচালক হত্যা মামলায় দুইজন গ্রেপ্তার

» উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি বন্ধ করায় এখন কেউ পিডি হতে চান না

» নেপাল পারলে কেন পারবে না বাংলাদেশ?

» কুয়েত চেম্বারে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের বিশেষ সভা

» শ্রীলঙ্কা জিতলে বাঁচবে স্বপ্ন, হারলে কঠিন সমীকরণ বাংলাদেশের

» সাতরাস্তা মোড়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল শুরু

» ৬৮ কেজি গাঁজাসহ আটক ১

» গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

দুই লাখ টাকা মাসিক চাঁদা এবং ব্যবসার ভাগ চেয়েছিলো খুনিরা

সংগৃহীত ছবি

 

ডেস্ক রিপোর্ট :ঢাকার এক ব্যস্ত বাজারে কয়েকদিন আগেও যাকে আসবাব কিনে দিয়েছিলেন সোহাগ, সেই নেতৃত্বেই এবার তাকে নির্মমভাবে খুন হতে হলো। বন্ধুত্বের মুখোশ পরেআসা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল পুরোনো বিরোধ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। খুনের ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে একাত্তর টিভির হাতে এসেছে, তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার পেছনে মূলত ব্যবসায়িক দ্বন্দ।

 

ঘটনাটি ঘটে গত ৭ জুলাই। চাঁদার দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে সোহাগের দোকানে ঢোকে সারোয়ার হোসেন টিটুর নেতৃত্বাধীন একটি দল। দোকানের কর্মচারীরা আতঙ্কে সিঁড়ির দিকে দৌড়ে পালালেও সোহাগ দোকানেই ছিলেন। প্রায় ১০ মিনিট ধরে সোহাগের সঙ্গে টাকা ও ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ান টিটু। প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা ও পার্টনারশিপ দাবি করেন তিনি। উত্তপ্ত বাক্যে সোহাগ দোকান ছেড়ে বেরিয়ে যান।

 

এরপর টিটুকে গোডাউনে তালা লাগাতে দেখা যায়। জানা গেছে, ঘটনার আগে থেকেই টিটু তাদের কাছে নিয়মিত টাকা দাবি করতেন। তবে পুলিশ বলছে, এটি ছিল না নিয়মিত চাঁদাবাজি; বরং একটি পারস্পরিক ব্যবসায়িক দ্বন্দ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

 

ঘটনার দুইদিন পর, ৯ জুলাই, সোহাগ নিজেই দোকানের তালা ভেঙে ব্যবসা শুরু করেন। এরপরই ঘটে সেই ভয়াবহ ঘটনা। কার অনুমতিতে তালা ভাঙা হয়েছে, তা নিয়েই শুরু হয় সংঘর্ষ, যা রূপ নেয় খুনে। খুনের আগে টিটু এবং তার সঙ্গীরা সোহাগের বাড়িতে যাওয়া-আসা করত, খেত-দিত, এমনকি একসাথে থাকতও।

 

তবে পুলিশ এখনও বলছে, হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল না চাঁদা আদায়। তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, চাঁদাবাজির কোনো পূর্বসূচনা বা অভিযোগ তাদের কাছে নেই। বরং ঘটনাটি এক ধরনের পারস্পরিক দ্বন্দ থেকেই তৈরি।

 

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে ১৯ জন আসামির নাম থাকলেও এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাত্র ৫ জনকে। মামলার প্রধান আসামিকে ধরা গেলেও এখনো ধরা যায়নি ঘটনার মূল হোতা সারোয়ার হোসেন টিটুকে।

 

সোহাগের পরিবার ও স্থানীয়রা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সোচ্চার হলেও তদন্ত এখনও চলমান। বন্ধুত্বের মুখোশের আড়ালে যে ভয়াবহতা লুকিয়ে থাকতে পারে, সোহাগের ঘটনা তারই একটি নির্মম প্রমাণ।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com